কবি নজরুল কি আসলেই মুসলিম বা ইসলামিক কবি ছিলেন?

আমরা সবাই জানি যে কবি নজরুল একজন অসাম্প্রদায়িক কবি ছিলেন। তিনি ছিলেন মানবতাবাদী, কোন নির্দিষ্ট ধর্মের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ করতে চাননি। বরং লড়ে গিয়েছেন ধর্মীয় রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে।

অথচ আজকাল দেখা যায় রক্ষণশীল মুসলিমরা এবং ওয়াজ মাহফিলে বক্তারা নির্লজ্জের মতো তাকে ইসলামিক কবি এবং সহীহ মুসলিম বলে ইসলামের মার্কেটিং করে থাকে। অথচ কবি নজরুল ধর্মের বিরুদ্ধে যা বলেছিলেন তা যদি এই সময় কেউ বলে তবে নাস্তিক আখ্যা দিয়ে ফাঁসির দাবি তুলে। তার জীবদ্দশায় কুরআন, হাদিস, খিলাফত এসবের এতো বিরোধিতা সত্ত্বেও শুধুমাত্র জাতীয় কবি হওয়ার কারণে মুসলিমরা তাকে ইসলামিক কবি প্রমাণে ব্যস্ত। তাই, তাদের এই ভন্ডামি বা অজ্ঞতার বিরুদ্ধে প্রকৃত সত্য উন্মোচন করাটা উচিৎ বলে মনে করি।

প্রথমেই আমরা ধারাবাহিকভাবে তার কিছু কবিতা, লিখা, বক্তৃতা এবং কর্মকান্ড দেখবো যা কুরআন- হাদিস এবং ইজমা কিয়াস অনুযায়ী স্পষ্ট কুফরী এবং তারপর তার সম্পর্কে তৎকালীন ইসলামিক স্কলার, মুসলিম কবি এবং মুসলিম নজরুল সমালোচকদের বক্তব্য দেখবো।

বি: দ্র : ইসলাম কারো আবেগ বা বিবেক দিয়ে চলে না, ইসলাম চলে কুরআন হাদিস দিয়ে।

নজরুলের কবিতায় কুফরি  :

১. প্রলয় শিখা (১৯৩০) নামক কাব্যগ্রন্থের ‘বিংশ শতাব্দী’ নামক কবিতায় নজরুল বলেন,

“কাটায়ে উঠেছি ধর্ম আফিম নেশা

ধ্বংস করেছি ধর্ম যাজকী পেশা,

ভাংগি মন্দির ভাংগি মসজিদ

ভাংগি গীর্জা গাহি সংগীত’ “

তিনি এখানে ধর্মকে আফিম বা মাদকের সাথে তুলনা করেছেন এবং বলেছেন যে তিনি ধর্মও ছেড়েছেন; ধর্মীয় পেশাও ছেড়েছেন। আমরা জানি যে তিনি একসময় মসজিদের মোয়াজ্জেন এবং ইমামতির দায়িত্ব পালন করতেন। এখন তিনি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে সংগীত গাইছেন। এর পূর্বে ধর্মকে আফিমের সাথে তুলনা করেছিলেন মার্কসবাদের প্রতিষ্ঠাতা বিখ্যাত নাস্তিক দার্শনিক কার্ল মার্ক্স ।

২. ‘মানুষ’ এবং ‘সাম্যবাদী’ নামক কবিতায় তিনি বলেন,

“পূজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল

মূর্খরা সব শোন 

মানুষ এনেছে গ্রন্থ,

গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোন।”

৩. “কোরান-পুরাণ-বেদ-বেদান্ত-বাইবেল-ত্রিপিটক-

জেন্দাবেস্তা-গ্রন্থসাহেব প’ড়ে যাও, য্ত সখ-

কিন্তু, কেন এ পন্ডশ্রম, মগজে হানিছ শূল?

দোকানে কেন এ দর কষাকষি? -পথে ফুটে তাজা ফুল!

তোমাতে রয়েছে সকল কেতাব সকল কালের জ্ঞান,

সকল শাস্র খুঁজে পাবে সখা, খুলে দেখ নিজ প্রাণ!

তোমাতে রয়েছে সকল ধর্ম, সকল যুগাবতার,

তোমার হৃষয় বিশ্ব-দেউল সকল দেবতার।

কেন খুঁজে ফের’ দেবতা ঠাকুর মৃত পুঁথি -কঙ্কালে? “

মানুষ নামক কবিতায় যারা ধর্মগ্রন্থ পড়ে তাদের ভন্ড বলেছেন এবং মূর্খ বলেছেন নজরুল। আবার সাম্যবাদী কবিতায় তিনি ধর্মগ্রন্থ বা কুরআন পড়াকে পণ্ডশ্রম বলেছেন ; মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকরও বলেছেন।

তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে কোন ঐশ্বরিক গ্রন্থ নয়, বরং মানুষের মাঝেই রয়েছে সব জ্ঞান।

একই কথা ২৫০০ বছর পূর্বে বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিকদ্বয় বিজ্ঞান এবং দর্শনের জনক থেলিস এবং জ্ঞানের পিতা সক্রেটিসও বলেছিলেন।

৪. ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় তিনি বলেন :

” বল   বীর –

বল  মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’

       চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’

       ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া

       খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,

       উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!

 মম   ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!”

“আমি  বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন,

আমি     স্রষ্টা-সূদন, শোক-তাপ হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!

আমি     বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!

আমি  খেয়ালী-বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন! “

এখানে তিনি বলেছেন খোদার আসন বা আরশ ছেঁদ করিয়া তিনি উঠেন। যা স্পষ্ট আল্লাহকে নিয়ে কটুক্তি।

অনেকে বলে থাকেন যে এখানে খোদা বলে ভুয়া খোদাদের বুঝিয়েছেন যা হাস্যকর। কেননা, এখানে তিনি ‘খোদাদের’ বলেন নি। তাছাড়া, ইসলাম অনুযায়ী কুরআনের খোদাই সাত আসমানের উপরের আরশে থাকেন, অন্য খোদা নয় এবং এটি কুরআন দ্বারা স্পষ্ট : “আল্লাহ তাআলা আছেন আরশের উপরে।” (সূরা ২০; ত্বা-হা ৫)

এরপর তিনি বলেন, আমি বিদ্রোহী ভৃগু ( সনাতন ধর্মে ইশ্বর বিরোধী চরিত্র, ইসলাম ধর্মের শয়তানের মতোই ),

ভগবান বা সৃষ্টিকর্তার বুকে লাথি মারবো।

৫. ‘পাপ’ নামক কবিতায় তিনি বলেন,

“সাম্যের গান গাই!-

যত পাপী তাপী সব মোর বোন, সব হয় মোর ভাই।

এ পাপ-মুলুকে পাপ করেনি করেনিক’ কে আছে পুরুষ-নারী?

আমরা ত ছার; পাপে পঙ্কিল পাপীদের কাণ্ডারী!  তেত্রিশ কোটি দেবতার পাপে স্বর্গ সে টলমল,

দেবতার পাপ-পথ দিয়া পশে স্বর্গে অসুর দল!

আদম হইতে শুরু ক’রে এই নজরুল তক্‌ সবে কম-বেশী ক’রে পাপের ছুরিতে পুণ্য করেছে জবেহ্‌ !বিশ্ব পাপস্থান

অর্ধেক এর ভগবান, আর অর্ধেক শয়তান্‌! “

এখানে তিনি সকল নবীকে পাপী বলেছেন যা স্পষ্ট কুফর। এমনকি তিনি সৃষ্টিকর্তাকেও পাপী বলেছেন।

( বিঃ দ্রঃ কবি সৃষ্টিকর্তার ক্ষেত্রে ইশ্বর, ভগবান খোদা সবই ব্যবহার করেন )

৬. ‘বারাঙ্গনা’ নামক কবিতায় তিনি বলেন,

“অহল্যা যদি মুক্তি লভে, মা, মেরী ( ইসার মা মরিয়ম) হ’তে পারে দেবী,

তোমরাও কেন হবে না পূজ্যা বিমল সত্য সেবি’?”

ব্যভিচারী অহল্যার সাথে মরিয়মকে তুলনা করেন তিনি। ( অর্থাৎ অহল্লা ইন্দ্রের সাথে ব্যভিচার করেছিলো, আর মরিয়ম তার খালু জাকারিয়ার সাথে ব্যভিচার করেছিলো )

৭. ‘আরতির থালা তসবির মালা’ নামক কবিতায় তিনি বলেন,

আরতির থালা, তসবির মালা

    আসিবে না কোন কাজে

   মানুষ করিবে মানুষের সেবা

   আর যত সব বাজে।

(তসবির মালা অর্থাৎ জিকির করাকে তিনি নিরর্থক বলেছেন, যেখান স্বয়ং কুরআনেই জিকিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে )

৮. ‘শহীদী ঈদ’ নামক কবিতায় তিনি বলেন,

কুরবানীতে পশু জবাই করা ওয়াজিব। অথচ এই ওয়াজিব কাজের বিরোধিতা করে তিনি বলেন,

“মনের পশুরে কর জবাই, 

পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই।”

( ইসলামের কোন বিধান এমনকি কেউ যদি নবীর সুন্নতের বিরোধিতা করে কোন সুন্নতকে ঘৃণা করে তবে ইসলামি শরীয়া অনুযায়ী সে কাফের )

৯. ‘নারী’ নামক কবিতায় তিনি বলেন,

আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।

বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর।

অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।

বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ বেদনা অশ্রুবারি

অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।

(অথচ কুরআন নারী পুরুষকে অসম বলা হয়েছে এবং পুরুষকে নারীর উপর মর্যাদা দেয়া হয়েছে )

এছাড়াও, ‘হিন্দু মুসলিম সম্পর্ক’ নামক কবিতায় তিনি হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই বলেছেন। – এটাও ইসলাম বিরোধী।

খ) এবার কবি নজরুলের কিছু প্রবন্ধ, কলাম এবং বক্তব্য দেখি :

(সময়ের স্বল্পতার কারণে আমি সবগুলো ব্যাখ্যা করছি না। যা বুঝার বুঝে নিন। জ্ঞানী বা বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট)

১. “মারো শালা যবনদের!” “মারো শালা কা ফেরদের!” – আবার হিন্দু মুসলমানী কাণ্ড বাঁধিয়া গিয়াছে৷ প্রথমে কথা কাটাকাটি, তারপর মাথা ফাটাফাটি আরম্ভ হইয়া গেল৷ আল্লার এবং মা কালীর ‘প্রেস্টিজ’ রক্ষার জন্য যাহারা এতক্ষণ মাতাল হইয়া চিৎকার করিতেছিল তাহারাই যখন মার খাইয়া পড়িয়া যাইতে লাগিল, দেখিলাম– তখন আর তাহারা আল্লা মিয়া বা কালী ঠাকুরানির নাম লইতেছে না৷ হিন্দু–মুসলমান পাশাপাশি পড়িয়া থাকিয়া একই ভাষায় আর্তনাদ করিতেছে, –‘বাবা গো, মা গো’ – মাতৃপরিত্যক্ত দু’টি ভিন্ন ধর্মের শিশু যেমন করিয়া এক স্বরে কাঁদিয়া তাহাদের মাকে ডাকে!”

“দেখিলাম, হত-আহতদের ক্রন্দনে মসজিদ টলিল না, মন্দিরের পাষাণ দেবতা সাড়া দিল না। শুধু নির্বোধ মানুষের রক্তে তাহাদের বেদী চিরকলঙ্কিত হইয়া রহিল।”

 “জানি, স্রষ্টার আপনি-মোড়ল “প্রাইভেট সেক্রেটারি”রা হ্যাট খুলিয়া, টুপি তুলিয়া, টিকি নাচাইয়া আমায় তাড়না করিবে, তবু ইহাদের পতন হইবে। ইহারা ধর্ম-মাতাল। ইহারা সত্যের আলো পান করে নাই, শাস্ত্রের এলকোহল পান করিয়াছে।”

” যিনি সকল মানুষের দেবতা, তিনি আজ মন্দিরের কারাগারে, মসজিদের জিন্দাখানায়, গীর্জার মধ্যে বন্দী। মোল্লা-পুরুত, পাদরী-ভিক্ষু জেল-ওয়ার্ডের মত তাহাকে পাহারা দিতেছে। আজ শয়তান বসিয়াছে স্রষ্টার আসনে। “

“দেখিলাম আল্লার মসজিদ আল্লা রক্ষা করিলেন না, মা-কালীর মন্দির কালী আসিয়া আগলাইলেন না। মন্দিরের চূড়া ভাঙিল, মসজিদের গম্বুজ টুটিল! আল্লার এবং কালীর  কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না। আকাশ হইতে বজ্রাঘাত হইল না মুসলমানদের শিরে, “আবাবিলের” প্রস্তর-বৃষ্টি হইল না হিন্দুদের মাথার উপর। “

– (মন্দির ও মসজিদ, নজরুল প্রবন্ধ সমগ্র পৃষ্ঠা ১১৬, ১১৭, ১১৮)

২.”তোমাদের অত্যাচারে, জুলুমে নিপীড়িত হইয়া, মানবাত্মার-মনুষ্যত্বের এত পাশবিক অবমাননা সহ্য করিতে না পারিয়া মানুষের মতো যাহারা স্পষ্ট করিয়া বলিয়া দিতে পারিল যে, এখানে আর ধর্ম কর্ম চলিবে না, এবং চিরদিনের মতো তোমাদের সংস্রব ছাড়িয়া তোমাকে সালাম করিয়া বিদায় লইল, -সেই বিদায়ের দিনেও তাহাদের উপর সামান্য পশুর মতো ব্যবহার করিতে তোমাদের লজ্জা হইল না? দ্বিধা হইলো না?”

– (মুহাজিরিন হত্যার জন্য দায়ী কে?, ন প্র স পৃষ্ঠা ৩০)

৩. “মানুষ হইয়া মানুষকে কুকুর-বিড়ালের মতো এতো ঘৃণা করা- মনুষ্যত্বের ও আত্মার অবমাননা করা নয় কি? সেদিন নারায়ণের পূজারী বলিয়াছিলেন, “ভাই, তোমার সে-পরম দিশারী তো হিন্দুও নয়, মুসলমানও নয়, -সে যে মানুষ! হিন্দু হিন্দু থাক, মুসলমান মুসলমান থাক, শুধু একবার এই মহাগগনতলের সীমা-হারা মুক্তির মাঝে দাঁড়াইয়া- মানব! -তোমার কন্ঠে সেই সৃষ্টির আদিম বাণী ফুটাও দেখি! বল দেখি, “আমার মানুষ ধর্ম!” 

– (ছুঁৎমার্গ, ন প্র স পৃষ্ঠা ৩৬, ৩৭)

৪. ‘ধুমকেতু’ কোনো সাম্প্রদায়িক কাগজ নয়। মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম। হিন্দু-মুসলমানের মিলনের অন্তরায় বা ফাঁকি কোনখানে তা দেখিয়ে দিয়ে এর গলদ দূর করা এর অন্যতম  উদ্দেশ্য। মানুষে মানুষে যেখানে প্রাণের মিল, আদত সত্যের মিল, সেখানে ধর্মের বৈষম্য, কোনো হিংসার দুশমনীর ভাব আনে না।

– (আমার পথ, ন প্র স পৃষ্ঠা ১০৫)

৫.

“টিকিত্ব হিন্দুত্ব নয়, ওটা হয়ত পণ্ডিত্ব! তেমনি দাড়িও ইসলামত্ব নয়, ওটা মোল্লাত্ব! এই দুই ‘ত্ব’ মার্কা চুলের গোছা নিয়েই আজ এত চুলোচুলি! আজ যে মারামারিটা বেধেছে, সেটাও এই পণ্ডিত মোল্লায় মারামারি, হিন্দু-মুসলমান মারামারি নয়। নারায়ণের গদা আর আল্লার তলোয়ারে কোনো দিনই ঠোকাঠুকি বাঁধবে না,অস্ত্র তাঁরই আর এক হাতের ওপর পড়্বেনা।  এত মারামারির মধ্যে এই টুকুই ভরসার কথা যে, আল্লা নারায়ণ হিন্দুও নন মুসলমানও নন। তাঁদের টিকিও নেই, দাড়িও নেই। একেবারে ‘‘ক্লিন’’! টিকি দাড়ির ওপর আমার এত আক্রোশ এই জন্য, যে, এরা সর্বদা স্মরণ করিয়ে দেয় মানুষকে যে, তুই আলাদা আমি আলাদা। মানুষকে তার চিরন্তন রক্তের সম্পর্ক ভুলিয়ে দেয় এই বাইরের চিহ্নগুলো।”

– (হিন্দু-মুসলমান, ন প্র স পৃষ্ঠা ১২৩) 

কবি স্পষ্ট দাড়ির বিরোধিতা করতেন এমনকি মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত, শেষ বয়সেও তিনি দাড়ি রাখেন নি। এই একটি বিষয়ই তার কাফের হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

যেখানে নবী মোহাম্মদ যেখানে পোশাক পরিচ্ছদের মাধ্যমে মুসলিমদের বিধর্মীদের থেকে আলাদা করতে চেয়েছিলেন, সেখানে কবি সেটার বিরোধিতা করেছেন।

এবিষয়ে সকল ইসলামিক স্কলারগণ একমত যে কেউ যদি সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত কোন সুন্নতের বিরোধিতা, সেটাকে ঘৃণা বা অবজ্ঞা করে, তা যে কারণেই হোক না কেন, সে স্পষ্ট কাফের। এ নিয়ে কুরআনের আয়াত :

“বলুন, আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর। আর তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তবে জেনে রাখ যে আল্লাহ কাফিরদের ভালবাসেন না।” সুরা  ইমরান, ৩:৩২

৬.” সঙ্গীতশিল্পের বিরুদ্ধে মোল্লাদের সৃষ্ট এই লোকমতকে বদলাইতে তরুণদের আপ্রাণ চেষ্টা করিতে হইবে। তাহাদিগকে শিখাইতে হইবে যাহা সুন্দর তাহাতে পাপ নাই। সকল বিধি-নিষেধের উপরে মানুষের প্রাণের ধর্ম বড়।

আজ বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে একজনও চিত্র-শিল্পী নাই, ভাস্কর নাই, সঙ্গীতজ্ঞ নাই, বৈজ্ঞানিক নাই, ইহা অপেক্ষা লজ্জার আর কি আছে? এই সবে যাহারা জন্মগত প্রেরণা লইয়া আসিয়াছিল, আমাদের গোঁড়া সমাজ তাহাদের টুঁটি টিপিয়া মারিয়া ফেলিয়াছে ও ফেলিতেছে। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের সমস্ত শক্তি লইয়া যুঝিতে হইবে। নতুবা আর্টে বাঙালি মুসলমানদের দান বলিয়া কোনো কিছু থাকিবে না। পশুর মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ হইয়া বাঁচিয়া আমাদের লাভ কি, যদি আমাদের গৌরব করিবার কিছুই না থাকে। ভিতরের দিকে আমরা যত মরিতেছি, বাহিরের দিকে তত সংখ্যায় বাড়িয়া চলিতেছি। এক মাঠ আগাছা অপেক্ষা একটি মহীরুহ অনেক বড়_ শ্রেষ্ঠ। হ”

[১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ৫ ও ৬ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের নাট্যভবনে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় মুসলিম তরুণ সম্মেলনের সভাপতিরূপে কবি উপরিউক্ত ভাষণ প্রদান করেন।

এখানে তিনি স্পষ্টভাবে ইসলামি বিধিনিষেধ এর বিরোধিতাসহ জনসংখ্যা বাড়ানোর বিরোধিতা করেন, যেখানে নবী মোহাম্মদ সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলেন যাতে তিনি উম্মতের সংখ্যা নিয়ে গর্ব করতে পারেন।]

একই সভায় তিনি পর্দা প্রথার বিরোধিতা করে আরো বলেন :

“আমাদের অধিকাংশ শিক্ষিত বা অর্ধ-শিক্ষিত লোকই চাকুরে, কাজেই খরচের সঙ্গে জমার তাল সামলাইয়া চলিতে পারে না। অথচ ইহাদের পর্দার ফখর সর্বাপেক্ষা বেশি। আর ইহাদের বাড়িতে শতকরা আশিজন মেয়ে যক্ষ্মায় ভুগিয়া মরিতেছে। আলো-বায়ুর অভাবে। এই সব যক্ষ্মা রোগগ্রস্ত জননীর পেটে স্বাস্থ্য-সুন্দর প্রতিভাদীপ্ত বীর সন্তান জন্মগ্রহণ করিবে কেমন করিয়া! ফাঁসির কয়েদিরও এইসব হতভাগিনীদের অপেক্ষা অধিক স্বাধীনতা আছে। আমাদের কন্যা-জায়া-জননীদের শুধু অবরোধের অন্ধকারে রাখিয়াই ক্ষান্ত হই নাই, অশিক্ষার গভীরতর কূপে ফেলিয়া হতভাগিনীদের চির-বন্দিনী করিয়া রাখিয়াছি। আমাদের শত শত বর্ষের এই অত্যাচারে ইহাদের দেহ-মন এমনি পঙ্গু হইয়া গিয়াছে যে, ছাড়িয়া দিলে ইহারাই সর্বপ্রথম বাহিরে আসিতে আপত্তি করিবে। ইহাদের কি দুঃখ কিসের যে অভাব তাহা চিন্তা করিবার শক্তি পর্যন্ত ইহাদের উঠিয়া গিয়াছে।”

(এসব লিখালিখি এবং বক্তব্যের  পর কি কেউ কখনো মুসলিম থাকে, আপনারাই বলুন। আর তাই চারদিক থেকে তাকে কাফের ঘোষণা শুরু করেছিলো।)

৭. ১৯২৬ সালের ১৭ই জানুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আত্মপ্রকাশিত ‘শিখা’এর এক সভায় কবি নজরুল বলেছিলেন –

– “বহুকাল পরে কাল রাত্রে আমার ঘুম হয়েছে । এতদিন আমি মনে করতাম আমি একাই কাফের , কিন্তু আজ দেখে আমি আশ্বস্ত হলুম যে , মৌ আনোয়ারুল কাদির প্রমুখ কতকগুলি গুনি ব্যক্তি দেখছি আস্ত কাফের । আমার দল বড় হয়েছে এর চেয়ে বড় সান্ত্বনা আমি চাইনা।

গ) কবি নজরুলের খেলাফতের বিরোধিতা এবং স্বঘোষিত নাস্তিক কামাল পাশার নেতৃত্বের পক্ষে অবস্থান :

সেসময়  মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন এবং মাওলানা মুহাম্মদ আলি ও শওকত আলীর নেতৃত্বে খিলাফত আন্দোলন- অসহযোগ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল শান্তিপূর্ণ উপায়ে ভারতবর্ষ থেকে ইংরেজদের বিতারণ।

আর খিলাফত আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল তুরস্কে মধ্যযুগীয় সামন্ত শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা, কারণ এই সমন্বিত সুলতানী শাসন ব্যবস্থার প্রধান তথা তুরস্কের সুলতানকে প্রায় সকল মুসলমানরা মুসলিম বিশ্বের খলিফা জ্ঞান করতো। নজরুল এই দুটি আন্দোলনের আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীনতা তথা স্বরাজ অর্জনে বিশ্বাস করতেন যা মহাত্মা গান্ধীর দর্শনের বিপরীত ছিল। আবার মোস্তফা কামাল পাশার নেতৃত্বে তুরস্কের সালতানাত উচ্ছেদের মাধ্যমে নতুন তুরস্ক গড়ে তোলার আন্দোলনের প্রতি নজরুলের সমর্থন ছিল।

কবি তাঁর রাষ্ট্রীয় ধ্যান-ধারণায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছিলেন মোস্তফা কামাল পাশার নেতৃত্ব দ্বারা, কারণ তিনি সামন্ততান্ত্রিক খিলাফত বা তুরস্কের সুলতানকে উচ্ছেদ করে তুরস্ককে একটি আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত করেছিলেন। তুরস্কের সমাজজীবন থেকে মোস্তফা কামাল যে মৌলবাদ ও পর্দাপ্রথা দূর করেছিলেন, তা নজরুলকে বেশি অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি ভেবেছিলেন, তুরস্কে যা সম্ভবপর, ভারত ও বাংলায় তা সম্ভবপর নয় কেন?

১৯১৭ সালের রুশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবও নজরুলকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছিল। নজরুলের  লাঙল ও গণবাণী পত্রিকায় প্রকাশিত ‘সাম্যবাদী’ ও ‘সর্বহারা’ কবিতাগুচ্ছ এবং কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল-এর অনুবাদ ‘জাগ অনশন বন্দী ওঠ রে যত’ এবং ‘রেড ফ্লাগ’ অবলম্বনে রক্তপতাকার গান এর প্রমাণ।

[ তথ্যসূত্র : কাজী নজরুল ইসলাম : স্মৃতিকথা, কমরেড মুজাফফর, বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া ]

এমনকি স্বঘোষিত নাস্তিক কামাল পাশার বন্দনায় তিনি কামাল পাশা নামক একটি কবিতাও লিখেন।

কবি নজরুল যে ইসলামিক কিছু কবিতা এবং গজল লিখেছিলেন সেটা দিয়ে অনেকে মুসলিম বানানোর প্রচেষ্টা করে। এখন কথা হলো তিনি তো হিন্দু ধর্মের পক্ষেও অনেক গান- কবিতা হিন্দু ধর্মের শ্যামা সংগীত  এমনকি তিনি হিন্দু দে দেবীর পূজাও করেছিলেন। তাই বলে কি তাকে হিন্দু দাবী করা যাবে?

যদিও ইসলামের পক্ষে গান গজলগুলো রাজনৈতিক ছিলো। তাকে মুসলিম সমাজ যেভাবে বয়কট করা শুরু করেছিলো তাতে তিনি নির্বাচনের সময় একটা সমস্যায় পড়েছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণার জন্য তার যথেষ্ট অর্থকড়ি ছিলো না, এরমধ্যে মাওলানা মৌলভীরা তার কাফের ফতোয়া দিতে নেতিবাচক প্রচারণা শুরু করেছিলো। ঠিক তখনই ভোটের লড়াইয়ে মরিয়া কবি জৈষ্ঠ্য রাজনীতিবিদদের পরামর্শে  ইসলাম ধর্ম ও ঐতিহ্যকে ভিত্তি করে প্রচুর গান, গজল ও কবিতা রচনা শুরু করেন। এসব গান, গজল ও কবিতায় তেমন লাভ হয় না। তখন অনেকেই কবিকে ভোটে জিততে ফরিদপুরের প্রভাবশালী পীর বাদশাহ মিঞার কাছ থেকে নজরুলের পক্ষে ভোট দেওয়ার ফতোয়া বা নির্দেশনা আনতে বলেন। সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদের বিরুদ্ধে নজরুল ছিলেন চিরবিদ্রোহী। কিন্তু লড়াইয়ের ময়দানে প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে অনন্যোপায় কবি পীরের সাথে দেখা করে ফতোয়া সংগ্রহ করতে রাজি হন।

একই জিনিস আমরা বর্তমান সময়েও দেখি,

যেমন : হাসানুল হক ইনু,  রাশেদ খান মেননরা  যে কাফের বা নাস্তিক , কিন্তু নির্বাচনের পূর্বে রাজনৈতিক কারণে তারাও কিন্তু হজ্জে যায় এবং ইসলামী মানবতার পক্ষে কথা বলে, সমজিদেও যায়। শাহরিয়ার কবিরও নিজেকে শান্তির বা মানবিক ইসলামের অনুসারী দাবী করে রাজনৈতিক বা কৌশলগত কারণে। নয়তো তারা টিকতেই পারবে না।

ইসলামী কবি ছৈয়দ এমদাদ আলী কবি নজরুল সম্পর্কে বলেছিলেন :

“কবি নজরুলের মধ্যে খাঁটি কবি প্রতিভার উন্মেষ দেখিয়া আমরা বড়ই আশান্বিত হইয়াছিলাম, কিন্তু বিদ্রোহী কবিতা লিখিয়া তিনি আমাদিগকে একেবারেই নিরাশ করিয়াছেন। তাহার এই কবিতায় দু’একটি মোছলমানী শব্দ থাকিলেও উহার ভিতরের সব জিনিসটা, হিন্দু মতে বলিতে গেলে উহার কাঠামো হইতে আরম্ভ করিয়া সাজসজ্জা পর্যন্ত সবই – হিন্দুধর্মের আদর্শে অনুপ্রাণিত। কবি নজরুলের এই সাহিত্যিক প্রচেষ্টা আমাদিগকে নিতান্ত শঙ্কান্বিত করিয়াছে। …”

আরেকটি সমালোচনা ছিল এরকমের –

“নজরুল ইসলাম নামক হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষের বাহবাপ্রাপ্ত জনৈক উচ্ছৃঙ্খল যুবকের অগ্নিবীণা এবং আরো কি একখানি বই পড়িয়াছি। উক্ত দুইখানি পুস্তক পাঠ করিলে উহার লেখক যে একজন ধর্মদ্রোহী কুলাঙ্গার তাহা সহজেই বুঝিতে পারা যায়।। এতদ্ব্যতীত শিবের পূজা, কালীর স্তব, দূর্গার আরাধনা, সরস্বতীর বন্দনা প্রভৃতি অংশিবাদিতায় লেখা ভরপুর। 

মারাত্মক ব্যাপার এটা যে, হজরত ইব্রাহীমের (আঃ) সঙ্গে মিঃ সি আর দাসের এবং বিবি মরিয়মের সহিত চরিত্রহীনা বীরাঙ্গনার তুলনা করিয়া এবং রোজা, নামাজ, হজ, যাকাত, কেতাব, পীর পয়গম্বর সম্বন্ধে মরদুদ কাফেরদের ন্যায় মুখে যা আসে তাই বলিয়া অভিশপ্ত ইবলিশ অপেক্ষাও পামরতার পরিচয় দিয়াছে।”

উইকিপিডিয়াতেও তার কোন ধর্ম পরিচয় দেয়া হয়নি। উইকিপিডিয়া মতে – ” নজরুল জন্মগ্রহণ করেছিলেন একজন সুন্নি মুসলিম পরিবারে, কিন্তু প্রায়শই ধর্মীয় সমন্বয়বাদে নিযুক্ত ছিলেন যে তাকে সাধারণ মানুষ কেবল একজন গর্বিত বহুত্ববাদী হিসেবেই দেখেন।

এছাড়াও, তার বিভিন্ন লেখায় তিনি মানবধর্মকেই সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছেন।

তাকে মসজিদের পাশে কবর দেয়াটাও ছিলো মুসলিমদের চালাকি :

এক্ষেত্রে একটি গানের উল্লেখ করা হয় যেটির গীতিকাব্যের নাম কোথাও উল্লেখ নেই যদিও,

‘মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই / যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।’ 

এখন কথা হলো এটি কবি নিজের জন্য বলেছেন নাকি মুসলিমদের মনের বাসনা তুলে ধরেছেন? কবির সব কথাতো আর নিজের জন্য নয়।

অথচ এটার বিপরীতেই তার গীতিকবিতা আছে :

যেদিন লব বিদায় ধরা ছাড়ি পিয়ে

  – কাজী নজরুল ইসলাম

যেদিন লব বিদায় ধরা ছাড়ি পিয়ে

ধুয়ো লাশ আমার লাল পানি দিয়ে।

শরাবী জামসেদি গজল জানাজায় গাহিও আমার

দিবে গোর খুঁড়িয়া মাটি, খয়রাবি ওই শরাবখানায়।

রোজ কেয়ামতে তাজা উঠব জিয়ে।

এমনি পিব শরাব, ভেসে যাব তাহারি স্রোতে

উঠিবে খুশবু শরাবের আমার ওই গোরের পার হতে।

টলি পড়বে পথিক সে নেশায় ঝিমিয়ে।।

[যেখানে শরাব ইসলামে হারাম, সেখানে এটাকে কোন পবিত্র কিছুর সাথে তুলনা কোনভাবেই ইসলামিক নয়।]

মূলকথা হলো, একজন ব্যাক্তি বা শিল্পী ইসলামের পক্ষে অনেক কথাই বলতে পারে কিন্তু একটি বিরোধিতা করলেই তা কুফরী এবং কাফের হয়ে যায়। ইসলামি শরীয়া মতে কেউ যদি প্রকাশ্যে কুফরি করে তবে তাকে প্রকাশ্যে তওবা করতে হবে এবং পুনরায় কালিমা পড়ে মুসলিম হতে হবে কিন্তু কবি নজরুল তা করেননি।

যেটা করেছিলেন বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার আশরাফ আলী থানবী, যদিও তিনি এতো বড় কোন কুফরী করেননি যা কবি নজরুল করেছিলেন।

কোন কাফেরকে মসজিদের পাশে কবর দিলেই কিন্তু সে মুসলিম হয়ে যায় না। এমন অনেক নাস্তিককেও সামাজিক রীতি মেনে মসজিদের পাশের কবরস্থানে তৎকালীন এবং বর্তমান সময়েও কবর দেয়া হয়, তাই বলে তারা মুসলিম বা ইসলামের কান্ডারি হয়ে যায় না।

উল্লেখ্য, আপনি কাউকে কাফের বলেন কিন্তু  সেই ব্যক্তি যদি কুফরী না করে থাকে তবে আপনি কাফের। ঠিক তেমনি, আপনি যদি একজন কুফরকারী বা কাফেরকে কাফের মনে না করেন তবেও আপনি কাফের।

এরপর যদি লজ্জা থাকে তবে ইসলামিস্টরা অসাম্প্রদায়িক  কবি নজরুলকে ইসলামিক কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করবে না।

  • Forhad H Fahad

    Related Posts

    পরকাল নিয়ে মুমিনদের বহুল জিজ্ঞেসিত প্রশ্নের জবাব

    প্রশ্ন : পরকাল না থাকলে যেসব অপরাধীদের দুনিয়াতে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না তাদের বিচার কিভাবে হবে? জবাব : ১. আপাততদৃষ্টিতে যদিও আমরা ধরে নিই যে পরকাল থাকলে আসলেই অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত হতো এবং খুব ভালো হতো, তার মানে কি এই যে পরকাল আছে বা পরকাল সত্য? অর্থাৎ কোনকিছু হলে বা থাকলে ভালো হতো, তার মানে তো এই নয় যে সেটা সত্য বা আছে। উদাহরণসরূপ : আপনি…

    Read more

    ধর্ম না থাকলে মানুষ নৈতিকতা শেখবে কোথা থেকে? 

    ধরুন, একজন আধুনিক সভ্য মানুষ হিসেবে আপনার কাছে অবশ্যই যুদ্ধবন্দী নারীকে গনিমতের মাল হিসেবে বিছানায় নেয়া খুবই নিন্দনীয় কাজ বলে গণ্য হবে। কিন্তু এই কাজটি আপনার নবীজী নিজ জীবনে কয়েকবারই করেছেন, এবং অন্যদেরও করতে বলেছেন। বা ধরুন আপনি এমন কারও সাথে আপনার বোন বা কন্যাকে বিয়ে দেবেন না, যার ইতিমধ্যে তিনজন স্ত্রী আছে। আপনার বিবেক, বুদ্ধি, আধুনিক মূল্যবোধ, আধুনিক ধ্যান ধারণা আপনাকে সেইসব মধ্যযুগীয় কাজ করতে বাধা দেবে। যদিও…

    Read more

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Latest

    আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কি হিন্দু শাক্তদেবী মা-কালীকে উদ্দেশ্য করে লেখা?

    আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কি হিন্দু শাক্তদেবী মা-কালীকে উদ্দেশ্য করে লেখা?

    একেই কি বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?

    একেই কি বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?

    কর্ণচিকিৎসা

    কর্ণচিকিৎসা

    তাকদীর বিষয়ক রেফারেন্স

    তাকদীর বিষয়ক রেফারেন্স
    কুদরত

    পরকাল নিয়ে মুমিনদের বহুল জিজ্ঞেসিত প্রশ্নের জবাব

    পরকাল নিয়ে মুমিনদের বহুল জিজ্ঞেসিত প্রশ্নের জবাব