আমরা অনেকেই জানি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আইন করে হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সম্প্রতি কাজাখস্তান সরকার আইন করে হিজাব নিষিদ্ধ করেছে। তাতে গোটা মুসলিম বিশ্বে এর প্রভাব পড়েছে। আমার খুব শিগগিরই সৌদি সরকার কতৃপক্ষ ও এমন একটা ডিসিশন নিতে পারে।
তুরস্ক ও তিউনিসিয়াতেও হিজাব নিষিদ্ধ। হিজাব পড়ে বলে অনেক সময় মহিলাদের আইডেন্টিফাই করা যায় না।হিজাব ব্যবহারকারী কানে ব্লুটুথ ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষায় নকল নতুন কিছু নয়।
মুসলিম ধর্মের পর্দার দুটো জিনিস ই বিতর্কিত। সত্যি কথা বলতে তৎকালীন আরবে ইহুদীরা গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য বোরখা ব্যবহার করত। পরর্বতীতে মুসলমান ধর্মের অবতার বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মেয়েদের এক প্রকার বস্তা বন্দী করে ফেলেছে।
আমরা জানি যুদ্ধের সময় পর্দা ব্যপারে শীতিলতা দেখিয়েছে। আয়েশা আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। আবার যখন যুদ্ধ শেষ হয়েছে তখন আগের মতই বস্তা বন্দী। ইসলাম কি করে এমন দুমুখো নীতি দিয়ে চলতে পারে।
আমরা প্রায় আমাদের দেশের সংবাদপত্র গুলোতে দেখি -মাদক চোরাচালানে হিজাব বোরখার ব্যবহার বেড়েছে। এমনকি পুরুষ অপরাধীরা ও বোরখা ব্যবহার করে নানা অপরাধ সংগঠিত করছে। হিজাব বোরখা সভ্য মানুষের পরিধান হতে পারে না।
যে শালীন সে বোরখা পড়লে ও শালীন না পড়লে ও শালীন। আজ স্বয়ং সৌদি আরবের মেয়েরা বোরখা বর্জন করতেছে। সৌদির আরবের বেশির ভাগ তরুন তরুনী ইউরোপে পড়াশোনা করে। অনেকটা স্বাধীনভাবে সেখানে পরিধান পড়ে। তারা কি পর্দার বিষয়ে জানেন না? তাদের কি কঠিন আজাবের ভয় নেই। তারা এখন গাড়ি চালাচ্ছে, শপিং মলে যাচ্ছে, সিনেমা দেখছে, পার্কে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর এই সবগুলো কাজ ই ইসলামের পর্দা বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। তারা কি না বুঝে শুনে এগুলো করছে। আমাদের দেশের কিছু মূর্খ মেল্লা এখনও পর্দা দোহাই দিয়ে আমাদের মেয়েদের গৃহ বন্দী করে রাখতে চাইছে। তাদের কথা এখন কে শুনে
অথচ আমাদের গার্মেন্টস কর্মীরা বেশির ভাগ নারী। পর্দা দোহাই দিয়ে তারা ঘরে বসে থাকলে দেশের অর্থনীতি গোল্লায় যাবে। আবার তাদের ইনকামের টাকা থেকে ও হুজুর হাদিয়ে নিতে কুণ্ঠাবোধ করে না। এটাই সাইন্স।
এই পর্দার দোহাই দিয়ে সেক্সকে ইসলামে ট্যাবু বানিয়ে ফেলেছে। এই কারনে মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে ধর্ষনের হার একটু বেশি। আর বাংলাদেশে তো বলাৎকারের দেশ বলা যেতে পারে।
আমাদের দেশের সংবাদপত্রে মাঝে মধ্যে দেখি দুই বা তিন বছরের মেয়ে ও ধর্ষনের শিকার হয়। আপাদমস্তক ঢেকে রাখা পর্দানশীন মেয়ে ও ধর্ষনের শিকার হয়। সেক্ষেত্রে পর্দার ভুমিকাটা কি? জানতে চাওয়া আমি!
কিছু কোরআন হাদিসের উদ্ধৃতি দেওয়া হলো
### কোরআনের আয়াত
1. **সুরা আন-নূর (২৪:৩১)**
“`
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
“`
**অর্থ**:
“এবং বিশ্বাসী নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নিচু রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর তাদের সাজ-সজ্জা যেন প্রকাশ না করে, কিন্তু যা সাধারণত প্রকাশিত হয় তা ছাড়া। এবং তারা যেন তাদের ওড়না বুকে ফেলে রাখে এবং তাদের সৌন্দর্য যেন প্রকাশ না করে, কিন্তু তাদের স্বামী, তাদের পিতা, তাদের শ্বশুর, তাদের পুত্র, তাদের স্বামীর পুত্র, তাদের ভাই, তাদের ভাইদের পুত্র, তাদের বোনদের পুত্র, তাদের মহিলাদের, তাদের অধিকার হাতের অধীনে যা আছে, পুরুষদের মধ্যে যারা যৌনতা থেকে মুক্ত, অথবা শিশু যারা এখনও মহিলাদের গোপনীয়তা সম্পর্কে সচেতন নয়, তাদের সামনে। এবং তারা যেন তাদের পা এমনভাবে মারে না যাতে তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ পায়। এবং তোমরা সকলে আল্লাহর প্রতি তওবা কর, হে বিশ্বাসীরা, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।”
2. **সুরা আল-আহযাব (৩৩:৫৯)**
“`
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
“`
**অর্থ**:
“হে নবী, তোমার পত্নী, তোমার কন্যা এবং মুমিন নারীদের বলুন যেন তারা তাদের চাদর নিজেদের উপর টেনে দেয়। এটি তাদেরকে চিনে ফেলার জন্য নিকটতর হবে এবং এতে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।”
### হাদিস
1. **সহিহ বুখারি** (ভলিউম ১, বই ৮, হাদিস ৩৪৬)
“`
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “একজন নারী যিনি ঈমানদার, তিনি যেন এমন কোন পোশাক পরিধান না করেন যা তার শরীরের আকার প্রকাশ করে।”
“`
2. **সহিহ মুসলিম** (হাদিস ২১২৮)
“`
আয়িশা (রাঃ) বর্ণিত, তিনি বলেন, “আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ) একদিন পাতলা কাপড় পরে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে এলেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং বললেন, ‘আসমা, যখন একটি মেয়ে তার ঋতুমতী হয়, তখন তার শরীরের এই এবং এই অংশ ব্যতীত (রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তার মুখ ও হাতের দিকে ইঙ্গিত করলেন) কিছুই দেখা উচিত নয়।'”
ইসলামে পর্দা একটি আধিপত্য বজায় রাখার হাতিয়ার ছাড়া কিছুই না। মেয়েদের মানসিকভাবে খাটো করে রাখার একটা কুটকৌশল বলা যেতে পারে। পর্দা তাদের গৃহবন্দী করে রাখে। অথচ লক্ষ বছর আগে শিকারী পুরুষের সঙ্গীটি ও তার সাথে শিকারের পিছনে দৌড়েছে, পর্দা ছাড়া। পর্দা কারনে মুসলামন মেয়েরা দেখতে পারে না এই সুন্দর পৃথিবীর রোমাঞ্চকর কত কি!তারা যেতে পারে না অনেক সামাজিক রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে।
আশার কথা হলো তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে মুসলিম নারীরা ও জেগে উঠছে। তারাও পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে সব কাজ করছে। ইসলামের বর্বর পর্দা প্রথার পতন হচ্ছে ও হবে।